চারা রোপন
- বাতাসের আড়াআড়ি ভাবে চারা রোয়া করতে হবে।
- স্ত্রী ধানের বয়স ২২-২৪ দিন হলে চারা রোয়া করতে হবে।
- পুরুষ ও স্ত্রী ধান একই দিনে রোয়া করতে হবে।
- বীজতলা থেকে চারা তোলার পরই চারা রোয়া করে নিতে হবে।
- দুই লাইন পুরুষ ও ৮ লাইন স্ত্রী ধান এই অনুপাতে রোয়া করতে হবে।
- তিনটি বয়সের পুরুষ ধানের চারাগুলি মিশিয়ে রোয়া করতে হবে।
- ৩০ × ১৫ সেমি দূরত্বে গুছিতে ৩টি করে চারা দিয়ে দু লাইন করে পুরুষ ধান (মাঝে ১৪৫ সেমি জায়গা রেখে) প্রথমে রোয়া করে নিতে হবে।
- দু’পাশের পুরুষ লাইন থেকে ২০ সেমি দূরত্ব রেখে মাঝে ১৫ × ১৫ সেমি দূরত্বে গুছিতে ১-২ টি করে চারা দিয়ে ৮ লাইন স্ত্রী ধান রোয়া করতে হবে।
রোগ-পোকা নিয়ন্ত্রণ :
স্ত্রী গাছ, পুরুষ গাছ থেকে বেশী রোগ-পোকা দ্বারা আক্রান্ত হয়। সাধারণতঃ ব্যাকটেরিয়া জনিত পাতা ধ্বসা, ঝলসা, খোলা ধ্বসা রোগ এবং মাজরা পোকা ও বাদামী শোষক পোকার আক্রমন বেশী দেখা যায়।
বিশেষ কাজ :
GA, (জিব্বারেলিক অ্যাসিড) স্প্রে-একরে ১৮ (১২ + ৬) গ্রাম GA, পাউডার, ১৮০ মিলি লিটার অ্যালকোহলে গুলে জলে মেশাতে হবে।
GA, স্প্রে স্ত্রী পাতার খোল থেকে শীর্ষ বেরোতে, ফুল খুলতে এবং পরাগ মিলনে সাহায্য করে। ৫ শতাংশ গাছে ফুল এলে ১ গ্রাম জিব্বারেলিক অ্যাসিড (GA,) পাউডার ১০ মিলি ইথাইল
অ্যালকোহল (না পাওয়া গেলে, দেশী মদে) প্রথমে গুলে নিয়ে পরে ১৫ লিটার (এক ট্যাঙ্ক) জলের সাথে মিশিয়ে (৬৬.৬ পিপিএম) পুরুষ ও স্ত্রী উভয় লাইনে স্প্রে করতে হবে। একরে ১৮০ লিটার স্প্রে দ্রবণ লাগবে।
১-২ দিন পরে আবার ০.৫ গ্রাম GA, ৫ মিলি লিটার ইথাইল অ্যালকোহলে প্রথমে গুলে নিয়ে পরে ১৫ লিটার (এক ট্যাঙ্ক) জলের সাথে মিশিয়ে (৩৩.৩ পিপিএম) পুরুষ ও স্ত্রী উভয় ফুলেই স্প্রে করতে হবে। একরে ১৮০ লিটার স্প্রে দ্রবণ লাগবে।
বীজবোনার দিনের পরিপ্রেক্ষিতে শীষ বের হওয়ার দিনের হিসাব
জাতটির মেয়াদ (দিন) | বীজবোনার পরে সম্ভাব্য শীষ বেরনোর দিন |
৯৫-১০০ | 80-8৫ |
১০৫-১১০ | ৫০-৫২ |
১১৫-১২০ | ৬০-৬২ |
১২৫-১৩০ | ৬৫-৭০ |
এক সাথে পুরুষ ও স্ত্রী গাছে ফুল ফোটানো
(Flowering syncronization)
ক) ফুল ফোটানো এগোতে (Advancement of flowering) করণীয়—
১) ২ শতাংশ সিঙ্গল সুপার ফসফেট স্প্রে। ২) একরে ৪ কেজি পটাশ – শীষের তৃতীয় দশার আগে প্রয়োগ।
৩) কেবলমাত্র পুরুষ গাছে সেচ দিয়ে।
৪) জিব্বারেলিক অ্যাসিড স্প্রে করে।
খ) ফুল ফোটানো পিছোতে (Delaying of flowering)
১) ২ শতাংশ ইউরিয়া স্প্রে শীষের ১ম-৫ম দশার মধ্যে।
২) পাতা কেটে— শীষের ৭ম দশায়।
৩) জল বের করে দিয়ে—পুরুষ গাছে শুধুমাত্র।
৪) হেঁটে বা ঘেঁটে মূল ছিঁড়ে দিয়ে।
৫) মাঝের কাঠি বা মূল গাছটি ছিঁড়ে দিয়ে।
কাঁচ থোড় আসার সময় থেকে ফুল ফোটার মধ্যে বিভিন্ন ধাপ বা দশা
ধাপ বা দশার সংখ্যা | ধাপ বা দশার নাম | দিন/মেয়াদ | শীর্ষের সম্ভাব্য দৈর্ঘ্য (মিমি) |
১ | কাঁচ থোড়ের সূচনা | ৩০ | ০.২ |
২ | প্রাথমিক শাখার সূচনা | ২৭ | ০.৪ |
৩ | দ্বিতীয় শাখার সূচনা | ২৪ | ১.৫ |
৪ | পুং এবং স্ত্রী অংশ গবেষণার সূচনা | ২০ | ২.০ |
৫ | পরাগ রেণুর সূচনা | ১৭ | ১০.১৫ |
৬ | যৌন কোষ বিভাজন | ১২ | ৮০ |
৭ | পরিপুষ্ট পরাগ | ৬ | ৯০-২৫০ |
৮ | পরিপক্ক পরাগ | ৪ | ২৬০ |
৯ | ধানে অবয়ব | ১-২ | ২৭০ |
বিশেষ কাজ
১. সহযোগী পরাগ সংযোগ(Supplementary pollination)
২০ শতাংশ গাছে শীষ আসার সময় থেকে থেকে ৬-১০ দিন ধরে ফুল ফোটার সময় দিনে দু’বার (রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে সকাল ৯.৩০ থেকে ১২.৩০ পর্যন্ত) দড়ি বা লাঠির সাহায্যে পুরুষ গাছ নাড়াতে হবে। এই কাজ পুরুষ গাছ থেকে স্ত্রী গাছে পরাগ সঞ্চারে সহায়তা করে হাইব্রিড ধানের বীজের উৎপাদন বৃদ্ধি করবে।
২. অনাহুত গাছ / শীর্ষ সরিয়ে ফেলা (Roguing)
- অনাহুত গাছ / শীষ সরিয়ে ফেলা বিশুদ্ধ বীজ উৎপাদনের এক গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
- গাছ বৃদ্ধির / পাশকাঠি ছাড়ার সময় গাছের গঠন, উচ্চতা, পাতার রং, পাতার গঠন ইত্যাদি দেখে অনাহুত গাছ চিনে সরিয়ে ফেলতে হবে।
- ফুল আসার সময় শীষের চরিত্র ও পরাগধানীর রঙ দেখে অনাহূত গাছ চিনে সরিয়েফেলতে হবে।
- ফসল পেকে গেলে শীর্ষে বীজের চরিত্র ও পুষ্ট ধানের শতকরা হিসাব দেখে অনাহূত গাছচিনে
সরিয়ে ফেলতে হবে।