আলুর বীজ উৎপাদন পার্ট 2 - Deals Export
  Join Our Telegram for Instant Coupons!

আলুর বীজ উৎপাদন পার্ট 2

(খ) বীজতলায় চারা তৈরি করে মূল জমিতে রোয়া করা পদ্ধতি

এক্ষেত্রে, প্রথম পদ্ধতির মতোই বীজতলা তৈরি করে সম পরিমাণ জৈব সার ও অর্ধেক পরিমাণ রাসায়নিক সার প্রয়োগ করবে হবে। ১ হেক্টর বা সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে রোয়া করার জন্য ১৮০০ বর্গফুট (৬০ ফুট ×৩০ ফুট) বীজ তলার এবং ২০০ গ্রাম প্রকৃত আলু বীজের প্রয়োজন। নার্সারী বেড এ আড়াআড়ি ভাবে ২ ইঞ্চি অন্তর ১/৪ ইঞ্চি গভীরে নালা করে নালাতে ১ ইঞ্চি দূরত্বে বীজ বুনতে হবে এবং একই ভাবে ঐ বীজ ঢাকা দিতে হবে।

বীজ বোনার পর একই নিয়মে সেচ দিতে হবে এবং পরিচর্যা করতে হবে। বীজ বোনার দুই এবং তিন সপ্তাহের মাথায় ইউরিয়া দ্রবণ ঝারির সাহায্যে প্রয়োগ করতে হবে। বোনার ৪ সপ্তাহের মধ্যে চারা রোয়ার উপযোগী হয়। গভীর ও ঝুরঝুরে করে মূল জমির মাটি তৈরি করতে হবে এবং বিঘাপ্রতি ৫-৭

গাড়ী গোবর সার প্রয়োগ করে মাটির সাথে ভালো করে মিশিয়ে দিতে হবে। জমিতে কাটুই পোকা, ঘুরঘুরে পোকা, উই পোকা ইত্যাদির উপদ্রব হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে বিঘাপ্রতি ৬ কেজি হারে কার্বোফুরান-৩জি জাতীয় দানা কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। শেষ চাষের পর মই দিয়ে জমি সমান করে দেড় ফুট অন্তর সারিকে দাগ টেনে দাগ বরাবর প্রাথমিক সার হিসাবে বিঘা প্রতি ৮ কেজি নাইট্রোজেন, ২০ কেজি ফসফেট ও ৮ কেজি পটাশ সার প্রয়োগ করতে হবে। ২০ ফুট অন্তর লম্বা লম্বি সেচ এর নালা রাখলে ভালো হয়।

এবার সারি বরাবর আঁকড়া দিয়ে ২ ইঞ্চি গভীর নালা টেনে দিতে হবে। চারা তোলার দিন সকালে হালকা করে সেচ দিয়ে বীজতলা ভিজিয়ে দিতে হবে এবং বিকালের দিকে নিড়ানি বা কাঠির সাহায্যে আলতোভাবে চারা তুলে মূল জমিতে ৬ ইঞ্চি দূরত্বে ১ ইঞ্চি গভীরে নালাতে বসাতে হবে। চারা বসানোর সাথে সাথে জলসেচ দিতে হবে (ঝারির সাহায্যে) এবং পরবর্তী ২-৩ দিন ঝারির সাহায্যে দুবে’লা জলসেচ দিতে হবে। এরপর প্রয়োজনানুযায়ী সেচ নালায় জল ছেড়ে দিয়ে থালার সাহায্যে ছিটিয়ে জলসেচ দিতে হবে।

৩-৪ বার সেচ দেওয়ার পর ভেলি বেঁধে দিতে হবে। ভেলি বেঁধে দেওয়ার পর থেকে সংলগ্ন নালাতে জল ঢুকিয়ে সেচ দিতে হবে। চারা রোয়ার ১০ দিন ও ২০ দিন পর দুইবার প্রতিবারে ২ কেজি হারে (বিঘাপ্রতি) নাইট্রোজেন ও পটাশ চাপান সার হিসাবে প্রয়োগ করে ছিটিয়ে সেচ দিতে হবে। দ্বিতীয়বার চাপান সার প্রয়োগের পর চারার গোড়ায় অল্প করে মাটি ধরিয়ে দিতে হবে। চারা রোয়ার ৩০-৩৫ দিনের মাথায় বিঘাপ্রতি ১০ কেজি হারে নাইট্রোজেন ও ৮ কেজি পটাশ তৃতীয় চাপান হিসাবে প্রয়োগ করে। ভেলি বেঁধে দিতে হবে। প্রথম পদ্ধতির অনুরূপ পরিচর্যা ও শস্য সুরক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

চারা রোয়ার ২.৫-৩ মাস পর মাটির উপর থেকে আলু গাছ কেটে দিতে হবে এবং তার ৫-৭ দিন পরে ফসল তুলে ছায়ায় শুকিয়ে বাছাই, পরিষ্কার এবং শোধন করতে হবে। ফসল তোলার দুই সপ্তাহ আগে থেকে সেচ দেওয়া বন্ধ কতে হবে। এই পদ্ধতিতে বিঘাপ্রতি ৩০-৩৫ কুইন্টাল আলু পাওয়া যায়। ছোট সাইজের আলু যতশীঘ্র সম্ভব হিমঘরে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। বড় সাইজের আলুও বীজ আলু হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

সংকর জাতের আলুবীজ উৎপাদন করার জন্য বেগুন বা টমেটোর মতো একই নিয়মে দুইটি জাতের ফুলের মধ্যে কৃত্রিম উপায়ে ঈতর পরাগযোগ ঘটাতে হবে। উৎপন্ন বীজ থেকে বীজতলায় চারা তৈরী করে প্রথমে প্রকৃত আলুবীজ এবং তার পরে খাওয়ার জন্য চাষের উপযোগী আলুবীজ তৈরী করতে হবে। এরাজ্যে আংশিক নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে তাপমাত্রা ও সূর্যালোক নিয়ন্ত্রণ করে সংকরায়ন ঘটানো সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *