ধর্ম : Religion
BoomJosh: সভ্যতার ঊষাকাল থেকেই ধর্মচর্চা মানুষের জীবনে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। প্রাচীনকালের অসহায় মানুষ প্রকৃতির প্রবল ও শক্তিধর সবকিছুকেই ভয় পেত | এই ভয় থেকেই এক সময় তাদের মনে ঈশ্বরের কল্পনা তৈরি হয়। তারা প্রকৃতির বিভিন্ন রহস্য ও প্রবল শক্তির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার উদ্দেশ্যে সেই প্রকৃতিকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করে। ক্রমে নিজেদের নিরাপত্তা, সুখশান্তি প্রভৃতির জন্যও প্রকৃতির বিভিন্ন বিষয়কে তারা সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করে। এভাবে মানুষের কল্পনা থেকে বিভিন্ন ঈশ্বরের সৃষ্টি হয়। ঈশ্বরের ক্রোধ থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য মানুষ এই সকল ঈশ্বরের উপাসনা বা পুজোর দ্বারা তাঁদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করে। এভাবেই প্রাচীন মানবসভ্যতায় ঈশ্বর এবং ধর্মের উদ্ভব ঘটে। পরবর্তীকালে ধর্ম মানুষের রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক উভয় জীবনকেই বিশেষভাবে প্রভাবিত করতে শুরু করে।
ধর্ম এবং রাষ্ট্র | Religion and the State
প্রাচীন যুগে রাষ্ট্র গড়ে ওঠার পূর্বেই মানবসমাজে ধর্মের উৎপত্তি হয়েছিল। সে যুগে মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে রাখার ক্ষেত্রেও ধর্ম একদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। পরবর্তীকালে রাষ্ট্রের উৎপত্তির ক্ষেত্রেও অন্যান্য কয়েকটি উপাদানের সঙ্গে ধর্ম বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। রাষ্ট্রের উৎপত্তির পরবর্তীকালে প্রাচীন ও মধ্যযুগের মানুষের রাষ্ট্রীয় জীবনের সঙ্গে ধর্মের গভীর যোগসূত্র গড়ে উঠেছিল। প্রাচীন ও মধ্যযুগে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বিভিন্ন সম্রাট তাঁদের রাষ্ট্রপরিচালনার ক্ষেত্রে ধর্মকে ব্যবহার করেছেন। তাঁরা কখনো কখনো নিজেদের রাষ্ট্রনীতির স্বার্থে ধর্মনীতিকে প্রভাবিত করেছেন। ভারতে মৌর্য সম্রাট অশোক, খলজি বংশের সুলতান আলাউদ্দিন খলজি, মোগল সম্রাট আকবর প্রমুখ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও সংহতির কাজে ধর্মকে সুকৌশলে ব্যবহার করে সাফল্য পেয়েছেন। আবার অন্যদিকে, ইউরোপে খ্রিস্টান ধর্মে পোপতন্ত্রের বিকাশ, খ্রিস্টান ও মুসলিম ধর্মের মধ্যে সংঘটিত ধর্মযুদ্ধ বা ক্রুসেড, আরব দুনিয়ায় খলিফাতন্ত্রের বিকাশ প্রভৃতি ধর্মীয় বিষয়গুলি মধ্যযুগের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে।